যোগাযোগঃ
আপনি একজন সচেতন পাঠক। অথচ নিজের শেকড়ের ইতিহাসই জানেন না। এটা অত্যন্ত লজ্জার বিষয়। আরবের এত দূরে থেকেও কীভাবে এই অঞ্চলে ইসলাম এলো? মুসলিমরা কীভাবে হাজার বছর ধরে এ অঞ্চল শাসন করল? এরপর কীভাবে সব আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেল? এসব কিছুই আমাদের জানা থাকা দরকার।
মেষপালকের সাথে থাকা সিংহশাবকটি যেমন নিজেকে মেষই মনে করে। আমরাও তেমন ইতিহাস ভুলে নিজেদের শক্তি হারাতে শুরু করেছি।
ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস লিপিবদ্ধ হয়েছে অমুসলিমদের হাত ধরে। আমরা যে ইতিহাস পাঠ করি, তাতে ভারতবর্ষে ইসলামের উত্থান ও তার বিস্তার এবং মুসলিমদের অবদান চিত্রায়িত হয় না বললেই চলে।
মুসলিম শাসকদের ইতিহাস আলোচিত হলেও তাদের দেখানো হয় স্বৈরাচারী, অত্যাচারী খলনায়ক হিসেবে।
কী আছে “সিন্ধু থেকে বঙ্গ” বইতে—
বইটি দুই খণ্ডে রচিত। প্রথম খণ্ডে আলোচিত হয়েছে সর্বমোট ২১টি অধ্যায়ে। যার প্রথম অধ্যায়ে লেখক পাঠককে নিয়ে গেছেন ‘শিকড়ের ইতিহাসে’, যেখানে আলোচিত হয়েছে ইবরাহিম আ.-এর মুনাজাত। এরপর ঈসা আ.-এর খোশখবর, ইহুদি ও বনি ইসরাইল। এরপরে ধারাবাহিকভাবে উঠে এসেছে মালাবারে ইসলাম, ভারতের গোড়ার কথা এবং প্রাচীন শিক্ষাব্যবস্থা, ইসলাম প্রচারে অলি আউলিয়ার অবদান, বঙ্গে ইসলাম প্রচার, বাংলায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা একটি ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ, ভারতে মুসলিম শাসনের সূচনা ও অবদান, গজনি বংশ, ঘুর বংশ, দিল্লির তুর্কি সাম্রাজ্য, খিলজি বংশ, তুঘলক বংশ, লোদি বংশ, তৈমুরের ভারত আক্রমণ, আঞ্চলিক স্বাধীন রাজ্যসমূহের উত্থান এবং সর্বশেষ দিল্লির সুলতানদের শাসন, সমাজ ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়েছে।
দ্বিতীয় খণ্ড সন্নিবেশিত হয়েছে ২০টি অধ্যায়ে। এখানে তিনি পাঠককে নিয়ে গেছেন মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা এবং গৌরবান্বিত ইতিহাসের আয়নায়। যার সূচনা হয়েছিল বাবরের শাসনকাল দিয়ে এবং পর্যায়ক্রমে উঠে এসেছে হুমায়ুন ও শের শাহ, আকবরের বঙ্গ বিজয়, সম্রাট শাজাহানের চাকচিক্যময় শাসনকাল, শাসক আওরঙ্গজেবের শাসনকাল এবং মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের বহুমুখী কারণ বিশ্লেষণ। মুঘল আমলে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশের চিত্র সবিস্তার তুলে ধরা হয়েছে। মুঘল আমলের সামাজিক অর্থনৈতিক অবস্থা, হিন্দু-মুসলিম সম্পর্ক, শিক্ষা, সাহিত্য ইত্যাদি চিত্রায়িত হয়েছে। সর্বশেষ আলোচনার বিষয়—ভারতবর্ষের সভ্যতা নির্মাণে ইসলামের অবদান।
যোগাযোগঃ